বসে বসে পড়তাছি ঠিক তখনই আমার আম্মু আমার কাছে এসে বললো,
- পাশের বাসার ভাবির মেয়ে এ প্লাস পাইছে।
- ভালো তো মিষ্টি দিয়ে গেছে।
আমার কথা শুনে আম্মু চোখ বড় বড় করে বললো,
- তোর কোন ধারণা আছে। মেয়েটা পিএসসি তে এ প্লাস পাইছে আর তুই কি পাইছোস?
- আম্মু ও ফাইভে পড়ে আর আমি ইন্টার এ পড়ি ওর সাথে আমার আকাশ পাতাল তফাৎ।
আমার কথা শুনে আম্মু কটমট করে তাকিয়ে আছে। ছোট বোন দরজার আড়াল থেকে বললো,
" আম্মু ওরে ওই ফাইভের মাইয়ার পায়ে ধুয়া পানি খাওয়াও দেখবা ও তাহলে এইচএসসিতে এ প্লাস পাবে"।
বোনের কথা আমি ওর দিকে তাকাতেই ও চোখ মেরে রুম থেকে চলে যায়। আম্মু ও হনহনিয়ে কোথায় চলে গেলো?
আমি ও আমার পড়ায় মনোযোগ দিলাম। পাঁচ মিনিট পরেই আম্মু এক গ্লাস পানি এনে আমার সামনে ধরে বললো,
" এই গ্লাসের পানি টা ঢক করে তাড়াতাড়ি খেয়ে নে"।
আম্মুর কথায় আমি গ্লাস টা হাতে নিয়ে দেখি পানির তলদেশে ময়লা জমে আছে। হালকা কালচে লালচে ভাব। পানির এরুপ অবস্থা দেখে আম্মুকে ব
- পানি এইরকম দেখতে কেন?
- ও কিছু না একটু ময়লা হয়ে গেছে।
- ময়লা পানি আমি খেতে পারবো না।
আমার কথা শুনে আম্মু কটমট করে তাকিয়ে বললো,
" এখনি পুরো গ্লাস খতম না করলে কপালে দুঃখ আছে"।
আম্মুর থ্রেটে কাজ হলো ভয়ে ঢক করে পানির গ্লাসটা শেষ করে আম্মুর দিকে বিশ্ব জয়ের হাসি দিলাম। আম্মু আমার হাসি দেখে বললো,
" আমার লক্ষী সোনা মেয়ে"।
আম্মুর কথা শুনে মনটা খুশিতে নাচতে থাকলো। আমার মনের নাচ দেখে আমার হারামি বোনটা বললো,
" শেষমেষ ফাইভের একটা মেয়ের পা ধুয়া পানি খালি আপু শুধু একটা এ প্লাস এর জন্য ছিঃ ছিঃ বেঁচে আছিস কেন মরে যা? আমি দড়ি আর কলসি এনে দেই বুড়িগঙ্গায় গিয়ে ডুব দিয়ে মর"।
বোনের কথা শুনে আম্মুর দিকে তাকাতেই আম্মু বললো,
" এ প্লাস পাবি"।
আম্মুর কথা শুনে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলাম বমি করার জন্য আম্মু ওয়াশরুমের দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বললো,
" একদম বমি করবি না এ প্লাস পাবি"।
আম্মুর কথা শুনে মনে হলো সত্যি বুড়িগঙ্গায় গিয়ে পচা পানিতে ডুবে মরি।
#তানজিলা ইসলাম
Comments (0)