শুরুটা হয়েছিলো একটা মেসেন্জার গ্রুপ থেকে । সেখানে গিয়ে নিজের সমন্ধে জানাতে হবে । তারপর তারা একটা পার্টনার খুজে দিবে । অবশ্যই সেটা হবে নিজের বিপরীত লিঙ্গের কেউ । যার শুধু নামটাই জানা যাবে ।অনেক টা অজানা ভাবেই কথা বলা । এর চেয়ে বেশি কিছুই জানা যাবে না । বলা যায়, অচেনা মানুষের ক্ষনিকের প্রাপ্তী ।
তখন আমি ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে পরি । এক ভাইয়ের মাধ্যমে গ্রুপে যোগ হয় । তারপরে তারা আমার জন্য একটা পার্টনার খুজতে থাকে । কিছু সময় পর আমার জন্য পার্টনারও পেয়ে যায় । তখনও আমি বুঝতে পারিনি আমি কী করতে যাচ্ছি । হাই হ্যালো থেকে কথা বলা শুরু হলো । তারপর কি করি কোথায় থাকি টুকটাক কথা বলি ।মেয়েটার নাম ছিলো সাদিয়া । সেটা ছিল তার ফেইক নাম । আমার পুরো নামটা শোনার পর, মেয়েটিকে তার নাম জিজ্ঞাসা করতেই বলে, ওইটা আমার ফেইক নাম । আমার ভালো নামটা না হয় অজানাই থাকুক । কথাটা আমার কাছে বেশ ভালোই লেগেছিল । সে দিন কিছু সময় কথা বলার পর দুজনেই বিদায় নেই অনলাইন থেকে ।
এরপর, দুদিন কোনো কথা হয়নি আমাদের মাঝে । বিকেল বেলা হাতে এক কাপ চা নিয়ে অনলাইনে আসলাম ।স্বন্ধ্যা বেলায় অনলাইনে এসে দেখি কোনো মেসেজ আসেনি । ফেসবুকে নিউজফিড দেখতে লাগলাম । তখন একটা মেসেজের শব্দ পেলাম , দেখি মেয়েটি মেসেজ করেছে, কেমন আছেন?
মেয়েটার মেসেজ দেখে মুখে এক চিলতে হাসি পেল । রিপ্ল্যাই দিলাম,
-এই তো চলছে নিজের মতো করে, বলতে গেলে ভালোই আছি। তা আপনি কেমন আছেন?
-যার জন্য ভালো থাকাটা সেই তো নেই । ভালো থেকেই বা কি হবে ।
-সেই মানুষ টা কি এখন আপনার থেকে অনেক দুরে?
-বলতে গেলে আমার কাছ থেকে হাড়িয়েই গেছে । তবে আমার নিজের মাঝে তাকে রেখে দিছি । তার সম্পুর্ন অস্তিত্বটা খুজে পায় নিজের মাঝে ।
-আপনি খুবই কঠিন কথা বলে ফেলেছেন । জীবনটা এরকমি বা কেনো? খুব কম লোকেই তার প্রিয় মানুষকে কাছে পায় । তবে আমি বলবো আপনি ধৈর্য ধরুন । হয়তো পেয়ে যেতে পারেন জীবনে নতুন করে বেচে থাকার কিছু বিষয়বস্তু ।
-তবে কি জানেন, জীবনটা এই মুহুর্ত বদ্ধ ঘরের মতো মনে হয় । চাইলেও আলো বাতাসের খোজে বের হওয়া যায় না ।
-আপনার জন্য খারাপ লাগছে । আপনি যে আমাকে এত কিছু বলছেন, আমাকে কি বিশ্বস্ত মনে হচ্ছে আপনার?
-তা ঠিক জানি না । তবে আপনার সাথে কথা বলতে, নিজের মাঝে কোনো বাধা মনে হচ্ছে না । ভালোই লাগছে । আপনি কি বিরক্ত হচ্ছেন?
-নাহ । মোটেও বিরক্ত হচ্ছি না । তবে আপনার সাথে নিজের মতো করে কথা বলতে পেরে অনেকটা প্রশান্তিই লাগছে ।
-আচ্ছা তাহলে এবার আসি । আবার অনলাইনে আসলে আপনার সাথে কথা হবে ।
-ঠিক আছে । আর শুনেন, ভালো থাকাটা না হয় নিজের প্রতি ছেড়ে দিয়েন । মন খারাপের তো হাজার টা কারন থাকে । আর মন ভালো রাখার জন্য না হয়, একটা কারন খুজে বের করে নিয়েন ।
-চেষ্টা করব । তবে আজকাল মন খারাপের কারন খুজি না । ভালো থাকতেই তো জীবনে যত যুদ্ধ ।
-তাও বটে । আচ্ছা, আপনি এই গ্রুপে কেনো এসেছেন ?
-কাউ কে ভোলার জন্যই আসা । যার নিঃসঙ্গতা আমাকে কুড়া কুড়ে খাচ্ছে । আপনি কেনো এসেছেন?
-বলতে পারেন, একাকিত্ব থেকে । একাই বেশি থাকি, তাই অনলাইনে আসা । আর গ্রুপে একজনের সঙ্গ পেলে খারাপ হয় না ।
-আপনার আসাটা তাহলে পুর্ন হয়েছে বলা যায়?
-তাও বলতে পারেন । আপনি কি এখন অনলাইন থেকে চলে যাবেন?
-হুম । পরে এক সময় কোনো এক স্বন্ধ্যায় কথা হবে ।
তার একটু পর মেয়েটা অফলাইনে চলে যায় । মেয়েটার শেষ কথাটা তখন বুঝতে পারিনি । বুঝতে পারি কিছুদিন পর । যখন টানা কিছু দিন মেয়েটা অনলাইনে আসেনি।
প্রায় প্রতিদিনই গেছি অনলাইনে মেয়েটার জন্য । নাহ । সেই মেয়েটার কিছু দিন দেখাই পেলাম না । মেয়েটার শেষ কথাটা বার বার মনে পরতে লাগল । পরে এক সময়, কোনো এক স্বন্ধ্যায় কথা হবে । কবে কথা হবে আমার ঠিক জানা নেই ।
"এই দিকে আমি পড়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম । কয়েক মাস পর আমার চুড়ান্ত টেষ্ট পরীক্ষা হবে । রাত দিন পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত হয়ে গেলাম । অনলাইনে যাওয়ার কথা ভুলেই গেছিলাম ।
মাঝরাত্রে আমার একবার ঘুম ভেঙ্গে যায় । ঘুম জড়ানো চোখেই ফেসবুকে যায় । অনলাইনে যেয়ে দেখি গ্রুপে সেই মেয়েটা নেই । ঘুমটা সাথে সাথেই উধাও হয়ে যায় । মনটা খারাপ হয়ে যায় । এইভাবে না গেলেও পারতো । বলে যেতেও পারতো । এইভাবে লুকিয়ে যেতে হবে ? মনটা খারাপ করে এইভাবে কিছুদিন কাটিয়ে দেয় ।
মেয়েটাকে ভুলেই গেছিলাম এই কিছু দিন ।
তবে মেয়েটাকে অতটা গুরুত্ব দেয়নি । কেবল মনে হতো, মেয়েটা একটা ভালো মনের মানুষ ছিল ।
বিকেল বেলা বারান্দায় দাড়িয়ে আছি । হাতে এক কাপ কফি নিয়ে । বৃষ্টি হচ্ছে এই স্বন্ধ্যা বিকেল বেলায় । হালকা বাতাস, সাথে নিঝুম বৃষ্টি ।
কফির ধোয়াই আর এই বৃষ্টি বিলাশি স্বন্ধ্যায় নিমিষেই সময়টা কাটানো যাবে । কফিতে একটা চুমুক দিয়েই, ফেসবুকে ঢুকে পরি । ফেসবুকে ঢুকেই ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে থাকি অবাক হয়ে । নিজেকে তখন, কিছু সময়ের জন্য হাড়িয়ে ফেলি । যখন নিজের মাঝে ফিরে এলাম । দেখি সেই মেয়েটা আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিছে । নিজেকে তখনও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না । মনের মাঝে এক অজানা হাসি পেল । মেসেন্জারে যেয়ে দেখি, এক ঘন্টা আগে মেয়েটা অনলাইনে ছিল । মেয়েটির আইডির নামটা ছিলো, কল্পনাই তুমি । আমার কাছে এই নামটা কেমন জানি লাগত । কেবল মনে হতো, হয়ত মেয়েটা অজানা কাউকে মনের মাঝে সহযত্নে রেখে দিছে । যাকে না দেখেই তার সমস্ত কল্পনাতে স্থান দিছে । মেয়েটিকে একদিন জিজ্ঞেস করব, এই নামটা রাখার রহস্যটা কি? নিজের নাম দিয়েও তো রাখতে পারত ?
তারপর থেকে মেয়েটার সাথে প্রায় প্রতিদিনই টুকটাক কথা বলতাম । মেয়েটি প্রায় রাতের শেষের দিকে মেসেজ করত । তখন, আমার চোখে রাজ্যের সমস্ত ঘুম এসে ভির জমাতো । মেয়েটা মেসেজ করলে, আমি মেসেজের শব্দ পেয়ে চমকে উঠতাম । আর ভাবতাম, একটা মেয়ে কেনো এতো রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হবে ? নয়ত কেনো শেষ রাতে ফেসবুকে এসে অপরিচিত কাউকে মেসেজ করতে হবে ?
ঘুম কম হলে মেয়েদের চেহারায় এক ধরনের ছাপ এসে যায় । এই মেয়ে কী কখনো নিজেকে আয়নায় দেখে?
ঘুম জড়ানো চোখে মেয়েটার মেসেজ, বিরক্ত নিয়েই সিন করি ।
মেসেজটা হতো দুই শব্দের, জেগে আছেন?
আমি রিপ্ল্যাই দেই, " শেষ রাতে ঘুমাতে যায়, এমন কোনো পাখির নাম আপনার জানা আছে ? মেসেজটি সিন হয়, কিন্তু কোনো উত্তর আসেনা । হয়ত মেয়েটি জানেনা, শেষ রাতে কোন পাখি ঘুমাতে যায় ।
এই শহরে অসংখ্যা পাখি আছে । সারা রাত জেগে থাকতে থাকতে শেষ রাতের দিকে অনিচ্ছাসত্ত্বে এক সময় চোখে ঘুম নেমে আসে ।
ছোট বেলায় মধ্যরাতে ঘুম ভাঙলে একটা পাখির ডাক শুনতে পেতাম । আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় সেই পাখিটির নাম জমকুলি । এই পাখি মধ্যরাতে থেমে থেমে ডাকে । প্রতিটি ডাক যেনো আমার বুকের মধ্যে আঘাত করতো । আমি ভয়ে কেপে কেপে উঠতাম । আমার মনে হয়, গবেষণা করে যদি এই পাখির কোনো নাম দেওয়া যেতো । তবে এই পাখিটির নাম দিতাম অভিশপ্ত পাখি ।
এই শহরে অসংখ্যা রাতজাগা পাখিদের মত এই পাখিরও কোনো অভিশপ্ত গল্প আছে । তাই হয়তো রাত জেগে কান্না করে ।
ক্ষনিক পর মেয়েটার মেসেজ আসে ।
"শেষ রাতে কোন পাখি ঘুমাতে যায় জানিনা । কিন্তু পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে, যাদের রাতের শেষ দিকে বলে কিছু নেই । আমি তাদের একজন ।
মেয়েটির মেসেজ পরে চুপ করে থাকলাম । কেবল মনে হত, মেয়েটা তার জীবন নিয়ে প্রচণ্ড হতাশ । মেয়েটা অদ্ভুত অদ্ভুত প্রশ্ন করত । সেই সব প্রশ্নের উত্তর যে আমার জানা নেই । কিভাবে দিব সেই সব প্রশ্নের উত্তর গুলা? নিজেকে কেমন জানি অপরাধী মনে হতে থাকে ।
মেয়েটা রাতজাগা পাখি হয়ে, যে সব প্রশ্ন গুলার উত্তর জানতে চাইতো, সেই সব প্রশ্ন আমাকেই করত । আমি তার প্রশ্ন গুলা ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে যেতাম । তারপরের দিন, অনলাইনে গেলে মেয়েটার দুটো মেসেজ দেখতে পেতাম, ঘুমিয়ে গেছেন ? আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ?
আমি শুধু ভাবতাম, আমাকেই কেনো এতো প্রশ্ন করে? আমার বিশ্বাস, এই মেয়ে যদি, কখনো আমাকে সামনে থেকে দেখত, তবে দেখেও না দেখার মত করে চলে যেত । কারণ আমরা ভার্চুয়াল জগতে যতটা পরিপাটি
বাস্তব
জীবনে কখনো ততটা নই । হয়ত নিজে নিজে অনূতপ্ত হত ।
মেয়েটি একদিন আমাকে প্রশ্ন করল
'একজন মানুষকে কতটা ভালোবাসলে বুঝানো যায়, তাকে ছাড়া জীবন মুল্যহীন?
আমি উত্তর না দিয়ে চুপ করে ছিলাম । যার কাছে আপনার কোনো মুল্য নেই, তার কাছে অযথা ভালোবাসার মুল্য দেখানো শুধুই বোকামি । আপনার মুল্য বুঝেনা সে আপনার ভালোবাসার মুল্য বুঝবে কিভাবে?
" মেয়েটার সাথে আমার একটা ভালো সম্পর্ক হয়ে ওঠে । দিন যত যেতে থাকে মেয়েটার সাথে ততই কথা বাড়তে থাকে । অনেক কথা বলতো মেয়েটা । আমিও বলতাম মেয়েটার সাথে । এতোটা কথা কারও সাথে বলতাম না । যত কথা বলতাম এই মেয়েটার সাথে ।
এমনি একদিন মাঝরাতে হঠাৎ বৃষ্টি । সাথে খোলা জানালার সামনে মৃদু বৃষ্টির ঝাপটা, আমায় মেয়েটাকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য করল । ভাবতে বাধ্য করলো যে, এই মেয়েটার সাথে আমি যতটা মুক্ত, অন্য কারও সাথে ততোটা মুক্ত নই ।
মেয়েটিকে মেসেজ দিলাম
-আপনাকে না দেখেই যদি, কেউ আপনার একাকিত্বকে অনুভব করতে পারে, সেটাকে কি বলা যায় বলুন তো?
'ওপাশ থেকে উত্তর এলো
-সেটাকে নিছক আবেগ বলেই কাটিয়ে দেবো । বলবো, মরিচিকা চোখেই ধোকা দিতে পারে, অনুভবে নয় । আর কেউ যদি এটাকে নিজের করে নিয়ে আপনাকে স্বাধিনতা দেয়, তবে? তবে আমার জন্য সেটা হবে অনেক বড় একটা আশা । সেটা কোনো মানুষ তার স্বপ্নে ভেবে থাকে । আমার ক্ষেত্রেও তাই ।
-প্রতিটি কথার মাঝে, লুকানো কিছু দীর্ঘশ্বাস, আমার অনুভবে প্রতিফলিত হচ্ছে । আপনার মন খারাপের কারণটা কী জানা যাবে?
-আমি অতীতে ফিরে তাকাতে চাই না । কিন্তু অতীত বারবার আমাকে ফিরে তাকাতে বাধ্য করে । আজ আমি আমার অতীতের একটা পুরো স্বপ্ন কে নিজ হাতে হত্যা করেছি । তাই ভাবছি বর্তমানে যে অতীতটা তৈরি করছি সেটা কি ঠিক?
-বর্তমানে যা করছেন তা অনেক টা বুঝে শুনেই করছেন । তবে কেনোই বা অযথা চিন্তা করছেন? অতীত থেকে শিক্ষা নিন । হয়তো ভবিষ্যতে গিয়ে পিছনে একটা ভালো অতীত দেখবেন ।
-আপনি আমার খারাপ সময়ে অনেক ভালো বন্ধু হয়ে পাশে ছিলেন । আপনাকে তাই একটা কথা বলি । জীবনে কখনও কাউকে ভালোবাসবেন না । কষ্ট পেতে পেতে মরেও যেতে পারেন ।
-আপনার এই ধারনাটি অনেকটা ভুল । জীবনে ভালোবাসতে মানা নেই । তবে আমাদের হারানোর ভয়টা বেশি, তাই আজকাল বলি প্রেমে পরা বারন । তবে আমি বারবার প্রেমে পড়তে চাই ।
-কেনো? কষ্ট পেতে কি খুব ভালোবাসেন নাকি?
-ভালোবাসার কষ্ট নেই, তবে আছে সুপ্ত অনুভুতি, হতে পারে এটা নিজস্ব অথবা দুজনের মধ্যে । কিন্তু ভালোবাসলে কারও তো ক্ষতি দেখছিনা ।
-আর কেউ যখন ধোকা দিয়ে চলে যায়, তখন সেটাকে কি বলবেন?
-তখন আমি বলবো সে অভাগা । প্রকৃতি ভালোভাসা পেয়েও সে এটার মর্ম বোঝেনি । তার চেয়ে অভাগা আর কেইবা হতে পারে । তাই বলে আমি ভালোবাসাকে খারাপ বলবো না । এটা খাটি এবং ভালোবাসাটা মুল্যবান সম্পদ ।
'অনেক্ষণ পর রিপ্ল্যাই আসলো ।
-এই কথাটা কি আপনার আগে বলা উচিৎ ছিলো না ? আপনি জানেন, এই একটি কথার অভাবে আমি কত রাত দিন ছটফট করেছি নিজেকে নিয়ে । সবগুলোই এখন কেবল নিজের বোকামি মনে হচ্ছে । যান আপনার সাথে আর কোনো কথা নেই ।
আমি কয়েকটা হাসির ইমোজি দিয়ে অনলাইন থেকে চলে আসলাম । মাঝরাত্রে বৃষ্টি থেমে থেমে হচ্ছে । মেয়েটা কী জানে না? তার প্রতি আমার বেড়েই চলেছে অনুভুতি । তাকে নিয়ে যে বারবার ভাবতে বাধ্য করতেছে । মেয়েটা দুদিন কোনো মেসেজ করেনি । হয়ত কোনো কারণে রেগে আছে । আচ্ছা সে দিন কী রাগ করার মতো কোনো কিছু বলেছি? নাকি অভিমান করে আছে? সর্বনাশ ! তাও আমার ওপর?
তারপরের দিন, মাঝরাত্রে ঘুম ভেঙ্গে যায় । অনলাইনে যেয়ে দেখি মেয়েটা এখনও জেগে আছে । মেয়েটাকে মেসেজ দিলাম,
-আপনি কী এখনও রেগে আছেন?
ওপাশ থেকে উত্তর এলো
-আপনার কেনো এমনটা মনে হচ্ছে, আমি রেগে আছি?
-রেগে না থাকলে শেষ রাত পর্যন্ত জেগে থাকতেন নাহ । নিশ্চয় কারও ওপর রেগে আছেন?
-রাগ নাহ, তবে অভিমান করে বসে আছি । আর আপনার ওপরই অভিমান করে আছি ।
-অভিমান কিন্তু সবার ওপর করা যায় না । তবে কি আমি স্পেশাল কেউ?
-হলে সমস্যা কি? আপনি তো এখনও কারও বাম পাজরের হার হয়ে যান নি ?
-তা অবশ্যই হয়নি তবে কেমন জানি লাগছে । আচ্ছা আপনার নাম তো এখনও জানি না । আপনার জন্য একটা নাম ঠিক করেছি ।
-তা জনাব দেখি কি নাম ঠিক করেছেন ।
মেসেন্জারে নিক নামটা সেট করে দিলাম রাতজাগা পরি ।
মেয়েটা নামটা দেখে বলল
-হিহিহিহি, বাহ আপনি তো অনেক সুন্দর নাম দিতে পারেন বটে ।
-আপনার কি পছন্দ হয়নি?
-আপনি নাম টা দিছেন পছন্দ না হয়ে কি পারে ।
-আমি কি সত্যি স্পেশাল কেউ?
-হুম অনেকটা ।
-আচ্ছা আমি যে এই রহস্যের প্রেমে হাবুডুবে খাচ্ছি, যদি ডুবে মরে যায় তাহলে কি হবে?
-তাহলে এই প্রথম কোনো রহস্যের বেড়াজালে কোনো জিবিত লাশের দাফন হবে ।
-আর যদি বলি এই রহস্যময়ীর প্রেমে আমি মরতে চাই । অসীমে তাকিয়ে কল্পনায় হাত বাড়িয়ে যদি বলি, একাকিত্বের সঙ্গি হবে কি আমার রাতজাগা পরি ?
-তখন আমি বলবো এই নামের কাউকে চিনিনা । তবে এটা শুধুই একটা ভুলের গুচ্ছ । শুধু শুধুই অনুভুতি গুলা ভোতা হচ্ছে ।
-তবে আমি বলবো, ভুল থেকেই হোক না শুরু । কেইবা জানবে তুমি আমি আর উনি ছাড়া ।
-আল্লাহ, তখন তো ভুলে ভুলেই জীবন পেরিয়ে যাবে ।
-আর কি বা চাই আমরা । ভুলে ভুলেই যদি জীবন পেরিয়ে যায় তাহলে আর কিছু চাইনা এই জীবনে । ভুল থেকে হলেও প্রতিটা মুহুর্ত জানান দিবো তোমায় ভালোবাসি প্রিয় ।
-বাব্বাহ, জনাব দেখি আজ অনেক রোমান্টি মুডে আছে ।
-খুব বেশিই বলে ফেললাম কী?
-হুম । অনেক পাজি হয়ে গেছেন আজ আপনি ।
-কারও মুখের হাসিটা দেখতে একটু তো পাজি হওয়াই যায় তাই না ।
-কিন্তু আপনি তো আমার হাসিমুখ দেখেননি কখনো ।
-যাক আপনি তাহলে বুঝতে পারছেন যে, কথাগুলো আপনার উদ্দ্যেশ্যেই বলা ।
-আপনি খুব চালাক জানেন? কিভাবে আমার থেকেই বের করলেন কথাটা ।
মেয়েটা অফলাইনে চলে যায় । একটু পর ফজরের আযান শুনতে পেলাম । মেয়েটার সাথে, কথা বলতে বলতে কিভাবে যে, সময় টা পার হয়ে গেল, একটুও বুঝতে পারলাম না । কেবল মনে হত, এই মেয়েটাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি । তাকে ছাড়া আমাকে অসম্পুর্ন লাগে । খুব বেশিই ভালোবেসে ফেলেছি । আচ্ছা, এই মেয়েটা কী আমাকে নিয়ে ভাবে ?
তার অনুভুতি গুলা কি আমাকে নিয়েই? আমার সব অনুভুতি গুলা যে এই মেয়েটাকে ঘিরে ।
তারপরের দিন বিকেল বেলা বারান্দাতে দাড়িয়ে আছি । কি মনে করে ফেসবুকে গেলাম । যেয়ে দেখি মেয়েটা অনলাইনে আছে ।
তাকে একটা মেসেজ দিলাম
"তোমার কাছে কিছুই চাওয়ার সাহস নেই আমার । আমি বরং তোমার কাছে নিজেকে দিয়ে দিলাম । তোমার জন্য হয়তো কিছু করতে পারবো না, তবে তোমাকে অনেক ভালোবাসতে পারবো । তোমাকে যখন বলব, ভালোবাসি বালিকা তখন তুমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তুমিও বলে দিও ভালোবাসি ।
মেসেজ টা দিয়ে চুপ করে থাকলাম । ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে আছি । একটু পর মেয়েটা মেসেজটা সিন করলো । কিন্তু রিপ্ল্যাই দিতে দেরি করছে । হয়তো ভাবছে মেয়েটা ।
'মেয়েটা ওপাশ থেকে উত্তর দেয়
-তবে ভয় হয় । যদি ভালোবাসতে গিয়ে আমি নিজেই হাড়িয়ে গেলাম, অথবা আপনি হাড়িয়ে গেলেন ? তবে কি এই ভালোবাসা টা অসমাপ্তই থেকে যাবে?
-ভালোবাসায় হাড়ানোর ভয়টা নেই । যা আছে সুপ্ত অনুভুতি । এই অনুভুতিটা না হয় দুজনের মধ্যেই থাকুক ।
-আপনি একটা পাগল ।
-আমি শুধু তোমার পাগল হয়েই সারাজীবন থাকবো ।
-থাকবে তো এইভাবে পাশে তুমি সারাজীবন?
-এই দেখেছো আমরা কিন্তু তুমিতে চলে এসেছি ।
-তুমি ছোট ছোট জিনিস লক্ষ করছ অথচ এইটা লক্ষ করোনি আমরা কতটা কাছে চলে এসেছি ।
-তুমি পাশে না থাকলে এই পৃথিবীতে কিছুই ভালো লাগবে না ।
-এতোটা ভালোবাসো আমাকে?
-বড্ড বেশিই ভালোবাসি । আমার ভালোবাসা আর সুপ্ত অনুভুতি গুলা শুধু তোমার জন্যই ।
-পাগল ভালোবাসি ।
মেসেজ টা দেখে, চোখ দুটো বন্ধ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম । তখন অনেক খুশি হয়েছিলাম । এতোটা খুশি কখনও হয়নি । মনে হচ্ছিল বাতাসে উড়তেছি ।
বেশ কিছুদিন মেয়েটা অনলাইনে আসেনি । নাম্বারও ছিলো না । নাম্বার নেওয়া প্রয়োজন মনে হয়নি । আমরা প্রায় সময় অনলাইনে থাকতাম । মেয়েটার জন্য কিছুটা চিন্তা হচ্ছিল ।
এর মাঝে, হঠাৎ মেয়েটা অনলাইনে এসে বলল,
-তুমি কি আমার সাথে দেখা করতে পারবে?
'আমি অনেক টা খুশি হয়ে বললাম
।
-কবে দেখা করতে হবে?
-ভ্যালেন্টাইন ডে তে দেখা করতে পারবে ?
-হ্যা । কোন যায়গাটাতে দেখা করতে হবে? আমি তোমাকে চিনবো কিভাবে?
-রমনার বটমুলে এই যায়গা'টাতে । আমি নীল শাড়ি পরে আসবো । আর আমি তোমাকে খুজে বের করে নিবো তার মধ্য থেকে । তুমি যথা সময়ে উপস্থিত থাকবে কিন্তু ।
বিকেল চার'টার দিকে থাকবে ।
" মেয়েটার সাথে দেখা হবে তাহলে ভাভতেই,
অনেক খুশিই লাগছে । কেবল মনে হচ্ছে এই কয়েকটা দিন কিভাবে পার করবো ।
"'আজকে ভ্যালেন্টাইন ডে । পৃথিবীময় ভালোবাসাবাসির দিন । বিশেষ দিনটি, সবাই তার প্রিয় মানুষের সাথেই কাটাবে ।
'আমি যথা সময়ে এই রমনার বটমুলে এই যায়গা'টাতে দাড়িয়ে আছি । চারপাশ টা ভালো করে দেখে নিলাম । সবাই তার প্রিয় মানুষের সাথে সময় কাটাতেই ব্যস্ত । আমি মেয়েটার জন্য উপহার হিসাবে একগুচ্ছ লাল গোলাপ আর একটা গল্পের বই নিয়ে এসেছি। ভালোবাসার দিবসে, এর চেয়ে ভালো উপহার কিবা হতে পারে আমার জানা নেই ।
"তুমিই তাহসান?
পাশ তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে । ভালো করে দেখে নিলাম মেয়ে'টাকে।
চোখে গোল ফ্রেমের চশমা । গোল গোল চেহারা । নীল সাদা শাড়ি পরে আছে । মনে হচ্ছে, শরতের এক টুকরো আকাশ । মেয়েটা অনেক মায়াবী স্নিগ্ধ । আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি । আমার এই রকম অবস্থা দেখে, ও মৃদু হেসে চলেছে । ও এতোটা সুন্দর হবে, আমার কল্পনাতে ছিল না । আমি ওকে বললাম,
-তুমিই সাদিয়া ?
ও ফিক করে হেসে দিয়ে বলল
-এইটা তো আমার ফেইক নাম । তোমার এই নামটা মনে আছে?
-তা তোমার নাম টা কি এখন জানা যাবে ?
-নাহ, এখনও না । তুমি পরে এক সময় ঠিক জানতে পারবে আমার নামটা ।
ওর কথা শোনার পর চুপ করে থাকলাম ।
আমি অবাক হচ্ছি যে, এই মেয়েটা কিভাবে চিনলো আমায়? ও ঠিক বের করে নিলো ।
তারপর মেয়েটাকে, একগুচ্ছ লাল গোলাপ আর বইটা এগিয়ে দিয়ে বললাম,
"তোমার জন্য এই এক টুকরো ভালোবাসা"
ও আমার থেকে গোলাপ আর বই টা নিয়ে, মৃদু হেসে দিয়ে বলল,
"যানো, তোমাকে এক পলক সামনে থেকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছিল । তোমায় ছুয়ে তোমার স্পর্শটা অনুভব করব বলে ।
ও আমার আঙুল দুটো স্পর্শ করল ।
আমি শিহরিত হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম । আমার প্রিয় মানুষটা আমার সামনেই দাড়িয়ে আছে । অথচ, কোনো কথা বলতে পারছিনা । এই মেয়েটাকে কত কোথাই না বলার ছিল । কিছুই বলতে পারছিনা ।
ও আমার সাথে অনেকটা সময় কাটানো পর বলল,
"তাহসান আমাকে এখন যেতে হবে ।
আমি একটু অস্থির হয়ে বললাম, আরেকটু সময় থেকে যাও না । ও এটা শুনে আরেকটু সময় থাকলো । মনে হলো, ও চলে গেলে আমি আর তাকে পাবো না । ও আমার গালে হাতটা রেখে বলল, পাগলটাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি । বলেই মাথার চুলগুলা এলেমেলো করে দিয়ে বলল, বিদায় দেবে না আমায়?
আমি মেয়েটাকে বললাম,
"আবার দেখা হবে তো আমাদের ?
ও চুপ করে থাকল চোখ দুটো বন্ধ করে । কাগজে মোড়ানো একটা বক্স,
ও আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল ।
এইটা তোমার জন্য ছোট একটা উপহার । বাসায় যেয়ে খুলবে বলে দিলাম । ওর দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে দিলাম ।
ও আমাকে নিয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকল কিছু সময়,
এর মাঝে একটা রিক্সা চলে আসে । ও রিক্সাতে উঠতে উঠতে বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছিল । আমি স্পষ্ট ওর করুন চোখের পানি দেখতে পেলাম । আশ্চর্য ও কান্না করছে কেনো? আমার কেবল মনে হচ্ছে, এইটাই কি আমাদের শেষ দেখা ?
ও আমার দিকে তাকিয়ে থেকে চলে গেল চোখের আড়াল হয়ে ।
"""
রাত্রি বেলা আমি বুকের উপর ফোন রেখে গান শুনছিলাম । চোখে কিছুটা ঘুম ছিলো, তখন হঠাৎ মেয়েটি মেসেজ করে ।
-তুমি কি জেগে আছো?
-হ্যা বলো তুমি?
-আমি একটা সুইসাইট নোট লিখেছি ।
মেয়েটির কথা শুনে মুহুর্তে আমার চোখ থেকে ঘুম উধাও হয়ে যায় । আমি দ্রুত গান বন্ধ করে দিয়ে বলি,
-কি পাগল হয়ে গেছো নাকি ? কার জন্য সুইসাইড নোড লিখেছো?
-মানুষ সুইসাইড করার আগে, অন্য কারর জন্য সুইসাইড নোড লেখে?
-মানে কি বলছো?
-আমি আমার সুইসাইড নোড লিখেছি । তবে বিশ্বাস কর, আমার মৃত্যুর পর কেউ কখনো এই সুইসাইড নোড পাবে না । লেখার কোনো প্রয়োজন ছিলো না । শুধু তোমাকে দেখাবো বলে লিখেছি । তবে প্রমিজ কর? এই সুইসাইড নোড দেখার পর ডিলেট করে দিবা ?
তিনশ সাড়ে তিনশ শব্দের সুইসাইড নোড আমায় পাঠায় । শেষ দু লাইনে লেখা ছিলো
"কারও উপর, আমার কোনো অভিযোগ নেই । ভুল মানুষকে না চেনাই ছিল, আমার জীবনে বড় ব্যর্থতা । আমার এই অভিশপ্ত জীবনে, নতুন করে তোমাকে জড়ালাম না । পারলে ক্ষমা করে দিও ।
"সুইসাইডের মতো যঘন্য ভুল পথ থেকে ফিরে এসো । তোমার জন্য অপেক্ষা করছে একটা সুন্দর পৃথিবী ।
'মেসেজটি সেন্ড করতে গিয়ে দেখি মেয়েটি আমাকে ব্লক করেছে, নয়ত আইডি টা ডিএকটিভ করে দিছে । কয়েকবার ট্রাই করেও মেয়েটির কাছে পৌঁছাতে পারেনি । বার বার মনে হচ্ছিল, কিছু একটা করার দরকার ছিল ।
মেয়েটির দেওয়া উপহার টি কাছেই ছিলো । তরিঘড়ি করে বক্সটি খুলে দেখি, একটা ঘড়ি আর একটা কাগজ ভাজ করা চিরকুট ।
চিরকুট টা খুলতে তাতে লেখা ।
"ভালোবাসা জিনিষ টা কি? আমি কখনোই জানতাম না । আমি কারও ভালোবাসা কখনো পায়নি তো । ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছি, তার ভালোবাসা কখনো পায়নি । মায়ের শূন্যতা আমাকে অনেক কাদিয়েছে । বাবাও পর হয়ে গেল, আরেক টা বিয়ে করে । তার থেকে বাবার আদর ভালোবাসা না পেয়েই বড় হয়েছি । খুব বলতে ইচ্ছে করতো, বাবা আমি একটুও ভালো নেই । বাবা আমার কথা কখনো শুনতোই না । সৎ মা আমাকে একটুও দেখতে পারতো না । ধিরে ধিরে তাদের কষ্ট আর অবহেলায় বড় হতে থাকি । মনের মাঝে কষ্ট গুলা পুষে রাখতাম । একাকিত্বকে সঙ্গি করে নিয়ে চলতে থাকলাম । এই সময়ের মাঝে, আমার জীবনে একটা ছেলে আসে । আমাকে প্রচুর ভালোবাসতো । তার ভালোবাসায় আমার সব কষ্ট আর্তনাত গুলো ভুলিয়ে দিতো ।
কষ্টের মাঝে নিজেকে তখন সুখি মনে হতো । কিন্তু, সময়ের সাথে সবকিছু বদলে যায় । এক সময়, সেই ছেলেটাও বদলে যায় । অন্ধকারের রাস্তার মাঝে, আমাকে একা রেখে স্বর্থপরের মতো চলে যায় । পিছনে একটি বারও ফিরে তাকায়নি । প্রতি মুহুর্ত মনে হত নিজেকে শেষ করে ফেলি । আমি মরে গেলেই সব কিছুর অবসান ঘটবে । কুলশূন্য নদীর বুকে বৈঠাহীন নৌকো নিয়ে কোনো দিশা খুজে পাচ্ছিলাম না । একাকিত্ব আমাকে ঘ্রাস করে ফেলেছিল । সব কিছু অসহ্য লাগতো । নিজের ছায়াটাকেও দেখতে পারতাম না । সব সময় অন্ধকার ঘরে একাই থাকতাম ।
এই সব কিছুর মধ্যে তুমি এসে আমায় বাচতে শেখালে ।
"তুমি আসাতে আমার বাচতে খুব ইচ্ছে করছিল । সেই আমি তোমার জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছি
। কি নির্মম ভাগ্য আমার, আগামি কাল আমার বিয়ে । আমার বিয়ে করার একটুও ইচ্ছে নেই । তোমাকে ছাড়া জীবনটা মুল্যহীন মনে হচ্ছে । তোমাকে না পেলে কিভাবে বেচে থাকবো অন্যকে নিয়ে । তোমার সাথে একটু নিজের মতো করে বাচতে খুব ইচ্ছে করছিলো । নিয়তি তা কখনোই হতে দিবে না । আমার এই অভিশপ্ত জীবনে তোমাকে আর জড়ালাম না । পারলে ক্ষমা করে দিও । না ফেরার দেশে চলে যাচ্ছি । আমার পাগলটাকে সত্যি অনেক ভালোবাসি । আমাকে মনে করে, মন খারাপ করো না ।
আমাকে ক্ষমা করে দিও তুমি ।
তোমার রাতজাগা পরি নিলিশা ।
"আমার চোখ দুটো দিয়ে অঝর ধারায় পানি পরতে থাকে । এই সামান্য সময়ের মাঝে দমকা হাওয়া ঝড় বয়ে গেল আমার এপর দিয়ে । নিজেকে কিছুতেই বুঝাতে পারছিলাম না, এমন টা কেনো হলো ? সারারাত ঘুমাতে পারিনি ।
নিজেকে নিকোটিনের ধোয়াতে পুড়িয়ে ফেলে ।
"শেষ রাত পর্যন্ত মেয়েটির মেসেজের অপেক্ষায় থাকি । রাত জেগে থাকা মানুষগুলো হয়তো খুব বেশি সুখে রাত জাগে না । হয়তো আমিই তার প্রকষ্ট উদাহরন । এ সকল মানুষদের দেখে হয়তো সৃষ্টি কর্তা বাকাভাবে হাসে আরেকবার, এদের সুখ নেই দেখে । শেষ রাতে মেসেজের শব্দ শুনে চমকে উঠি । এই বুঝি মেয়েটি মেসেজ করেছে,
এখনো জেগে আছেন?
"""সমাপ্ত"""
লেখা=তাহসান আহমেদ
Comments (0)