বিশেষ কাজে বের হয়েছিলাম। সামনে হঠাৎ টং দোকানে দেখলাম আমার গফ তামান্না একটা ছেলের সাথে দাড়িয়ে চা খাচ্ছে আর হাসছে। আমার মাথা তো পুরাই গরম দেখে। তলে তলে তাহলে তামান্না এই করতেছে। তার সাথে আমার সম্পর্ক প্রায় ৩ মাস চলতেছে। বলেছিলো আমি ছাড়া তার আর কোনো থার্ড পার্সন সিংগুলার নাম্বার টাইপ কেউ নাই। আমি কাছে যাচ্ছি, ছেলেটাও বেশ হ্যান্ডসাম দেখলাম, জিম করে মনে হচ্ছে সেই ফিটনেস। তার তুলনায় আমি ফ্যাকাশে, শুটকি টাইপ একটা ছেলে। এই হাড্ডির সাথে কোনোরকম মাংস লেগে আছে । বুঝতে পারলাম আমি তামান্নার মন মতো না হওয়ায় হ্যান্ডসাম পুরুষের প্রেমে পড়ে গেছে। দাড়া আজকে দেখে নেবো তামান্নাকে। হাতেনাতে যখন পড়ছে ধরা পালাবে কই। আমাকে ধোঁকা দেওয়া।
আমি কাছে গিয়ে সুন্দর করে হাত তালি দিয়ে বললাম,
-বাহ বাহ! আমাকে বাদ দিয়ে সুন্দর, খুব হ্যান্ডসাম, স্মার্ট বয়ের প্রেমে পড়েছো। বাহ কি প্রেম আমাকে ফাঁকি দিয়ে? এক ডিলে দুই পাখি মারা, এই তাহলে তোমার প্রথম আর শেষ ভালোবাসা আমি?
আমার কথা শুনে দু'জনের হাত থেকে চায়ের কাপ পড়ে গেল। তারপর একে অপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করতেছে। তামান্নার চোখে-মুখে ভয়ের আভাস। আমি বললাম,
-কি হাতেনাতে ধরাতে খুব ভয় পেয়েছো?
তারপর ছেলেটা তামান্নাকে মাথাটা হালকা নেড়ে ইশারা করলো চলে যেতে। ছেলেটা কেনো যেনো দাঁতে দাঁত চেপে খেঁচা শুরু করেছে। আমার দিকে পুরাই রক্তগরম চোখে চেয়ে আছে। বলেই ফেললাম,
-এহহহ গায়ে লাগছে কথা তাই না? আরেকজনের প্রেমিকাকে ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ধান্দা।
এদিকে তামান্না চলে যাচ্ছে, তাকাচ্ছেও না আমার দিকে। কি আজব। বললাম,
-ঐ তুমি কই যাচ্ছো, আমার জবাব দিয়ে যাও? তুমি পালিয়ে যাচ্ছো কোন সাহসে? ঐ বাটপার ঐ!
হঠাৎ ছেলেটা জোরে বললো,
-ওওওও আমার ছোট বোনননন!
এটা শোনা মাত্রই পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল মনে হচ্ছে। চোখেমুখে অন্ধকার দেখা শুরু করছি। ছেলেটার দিকে ফিরে তাকালাম। আমার মতো শুটকি কে সে খপ করে ধরে জাস্ট পিঠে একটা ঘুষি মারলো। হাত দুইটাকে পেঁচিয়ে দিলো একটা চাপ। কোমরে একটা লাথি মারলো আর পায়ে জোরে একটা ল্যাং মেরে ফেলে দিয়েছে মাটিতে। কিছু বলার সুযোগই দিলো না, মূহুর্তেই যা ঘটলো বুঝতেই পারলাম না। গাধার মতো হয়ে গেলাম। তারপর বললো,
-তোর মতো হাঁদারামের সাথে আমার বোন প্রেম করেছে এটাই তোর ভাগ্য। তুই একটু আগে যেনো কি কি বললি? এই ব্যাডা। সাহস কতো তোর? আমারে চিনস?
আবার মারতে আসতেছে আমাকে। ভয়ে বলে দিলাম,
-সরি ভাই। ভাই আমারে মাফ করে দেন ভাই। বিরাট ভুল করে ফেলেছি। আলভা এডিসনও এতো ভুল করেনি ভাই। ওমাগো।
-চুপ কর বেয়াদব।
হনহন করে ছেলেটা চলে যাচ্ছে। আমি ওখানে ব্যাথায় নড়তে পারছি না। কতগুলো লোকজন আমাকে ঘিরে জড়ো হয়েছে, নাটক দেখতেছে বেয়াদবের দল। এমন কারাতে স্টাইলে মারছে এখন ব্যাথা শুরু হচ্ছে। বুঝতে পারলাম শালায় জিম করে। জায়গায় জায়গায় মেরে সাইজ করছে,
-ওরিইইই মাগোওওওও। ব্যাথা। অনেক ব্যাথা।
হঠাৎ মোবাইলের রিংটোন বেজে উঠলো, ওওও সাথী একবার এসে দেখে যাও আমি কতো সুখে আছি!
দূর বালের রিংটোন। উফ ব্যাথা হাত ব্যাথা করে ফেলছে। কোনোরকম ফোন পকেট থেকে বের করে দেখি মাই জান, মাই কলিজা ভুনা, তাম্মুজান কল দিয়েছে। ফোন রিসিভ করলাম,
-তুমি গাধার মতো এটা কি করেছো? গাধামির কারনে ভাইয়ের হাতের কিলানি খেয়ে তুমি বেঁচে আছো নাকি মরে টরে গেছো?
-ওমাগো রে। ব্যাথা অনেক ব্যাথা!
-উফফ, কিছু না বুঝে কেনো তুমি এমন পাকনামি করেছো? এখন কি ভালো হয়েছে? আমার ভাই কারাতে জানে। কেমন বোধ করছো এখন?
-এ্যাইইই দূররর বেডি, কেমন শালা এটা? ভুল একটু নাহয় করছি, তাই বলে হবু জামাইরে কেউ এমনে মারে? ফোন রাখ, কথা কইবি না আমার লগে। টুট....টুট
অনেক ব্যাথা, ওরি মা গোওওওও!
©anayet ullah Raihan
Comments (0)