ক্লাস ফাইভে পড়ুয়া নিশি আমার সামনে এসে ইতস্ততভাব করে বললো,
-আপনাকে আমি অনেক ভালবাসি। অনেক দিন থেকে বলবো বলবো করে লজ্জায় বলায় হয় নি, আজ আর না বলে থাকতে পারলাম না। আই লাভ ইউ।
.
নিশির কথা শুনে আমি রীতিমত ২২০ ভোল্টের একটা বড় রকমের শক খেলাম। এই পিচ্চি মেয়েটা বলে কি, মাথামুথা মনে হয় সব গেছে। আমি পড়ি ইন্টারে আর সে পড়ে ফাইভে। কোথায় সে আমাকে রিসপেক্ট করবে তা না করে সে আমাকে বলছে-আমি আপনাকে ভালবাসি।
.
বুঝলাম ঘটনা সাংঘাতিক পর্যায়ে পৌছে গেছে। আমি ওকে পকেট থেকে ১০ টাকার নোট বের করে দিয়ে বললাম,
যাও এইটা দিয়ে চকলেট কিনে খাইয়ো। এই বয়সে তোমার এইসব চিন্তা ভাবনা মাথা থেকে দূর করে মনযোগ দিয়ে পড়াশুনা করা উচিত।
.
এই ঘটনার দুইদিন পর আমি দ্বিতীয় বারের মত আবারো ২০০ ভোল্টের একটা বড় রকমের শক খেলাম। আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না, ক্লাস ফাইভের মেয়েও ফেইসবুক চালায়। তাও আবার আইডির নাম আ্যাঞ্জেল নিশি। আ্যাঞ্জেল নিশির রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করার পর মুহুর্তে সে আমারে বললো, দেখেন আমি আপনাকে অনেক ভালবাসি। আপনার সাথে আমার সব সময় কথা বলতে ইচ্ছে করে। নাম ধরে ডাকতে ইচ্ছে করে, লং ড়্রাইভে যেতে ইচ্ছে করে। এরপর এটা সেটা অনেক কথা। আমি ওকে বার বার বুঝাতে লাগলাম, এইসব প্রেমের ভুত মাথা থেকে ছাড়াও মন দিয়ে পড়াশুনা করো। এরফল স্বরূপ যা হলো, নিশি নামের পিচ্চিটা সাতসাত স্টাটাস দিল- "জীবনটা বেদনার, এইজন্য কাউকে মন থেকে ভালোবাসতে নেই। "
.
এই ঘটনার বেশ কয়েকমাস অতিবাহীত হওয়ার পর আমি আবারো তৃতীয়বারের ন্যায় ২২০ ভোল্টের একটা বড় রকমের শক খেলাম। নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, ক্লাস ফাইভে পড়া একটা মেয়ে ইন এ ওপেন রিলেশনশীপ স্টাটাস দিতে পারে । আমি মনের ভেতর কিছুটা অবিশ্বাস নিয়ে পিচ্চি নিশিকে মেসেজ দিয়ে বললাম,
-কি ব্যাপার পিচ্চি, ইন এ ওপেন রিলেশনশীপ
স্টাটাস দিলে কেন জানি ?
-আপনার জন্য বসে থাকব নাকি ?
.
পিচ্চি নিশির মুখে এমন কথা শোনার পর মুহুর্তেই আমিও নিশির মতো করেই একটা স্টাটাস দিলাম- জীবনটা বেদনার, এই জন্য আর বেচে থাকতে ইচ্ছে করে না ।
.
রাসেল আহমেদ
Comments (0)