দেয়ালঘড়িতে সময় বর্তমানে দুইটা বেজে পঁচিশ মিনিট।প্রতিদিনের পড়া শেষ করতে প্রায়ই অনেক রাত হয়ে যায়। চারদিকে পিনপতন নিরবতা। আমার কাছে পড়ার জন্য এটাই উপযুক্ত সময়। ক্যালেন্ডারে মাঘ মাস চলছে এখন। আবহাওয়ায় কেমন একটা হিমশীতল ভাব। রাত যত গভীরের দিকে যায় শীতটা যেন আরও জেঁকে ধরতে চায়।
আজও প্রত্যেকদিনের মত পড়া শেষ করতে করতে অনেকটা রাত হয়ে গেল। আমি পড়ার টেবিলে বসে একটু পর পর ঝিমুচ্ছি। বইয়ের পাতা উল্টাতে উল্টাতে ভাবছি, এখন এই মুহূর্তে এক কাপ গরম চা খেতে পারলে বোধহয় শরীরের ঝিম ভাবটা উবে যেত। কিন্তু উঠে গিয়ে চা বানাতেও আলসেমি লাগছে। তাই এই মুহূর্তে চা খাওয়ার ভাবনাটা মাথা থেকে মুছে ফেললাম। পুনরায় পড়ায় মনোযোগ দিতেই আমার রুমের দরজা খানিকটা নড়ে উঠলো। আমি বইয়ের ওপর থেকে চোখ সরিয়ে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে সেদিকে তাকালাম। দেখলাম আম্মু দাঁড়িয়ে আছে। আমি হাঁফ ছেড়ে বললাম, যাও তুমি তো আমাকে ভয়ই পাইয়ে দিয়েছিলে! বাপ রে, কী সাংঘাতিক।
আম্মু মুচকি হেসে বললেন, ভয় পাওয়ার কী আছে। তোকে খুব ক্লান্ত লাগছে। চা খাবি? বানিয়ে দিই?
আমি বললাম, আমিও ভাবছিলাম চা খাবো। ভালোই হলো। বানিয়ে দাও খেতে খেতে পড়বো।
আম্মু মুচকি হেসে, আচ্ছা বলে চলে গেলেন।
আমি আবার পড়ায় মননিবেশ করতেই টেবিলের ওপর রাখা মুঠোফোনটা বেজে উঠলো। 'এত রাতে কে কল দিলো আবার?' ভাবতে ভাবতে ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকাতেই আম্মুর নামে সেইভ করা নাম্বারটা ভেসে উঠলো! তৎক্ষনাৎ মনে পরলো আজকে তো বাসার সবাই জরুরি কাজে গ্রামে গিয়েছে। আমার শিরদাঁড়া বেয়ে হিমশীতল একটা শিহরণ বয়ে গেল।
আনিশা আয়ান
Comments (0)